দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জাপানি সৈন্যদের হাতে যৌনদাসত্বের শিকার হওয়া কোরীয় নারীদের ক্ষতিপূরণ দিতে জাপান সরকারকে আদেশ দিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার এক বিচারক।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকে কেন্দ্র করে এই দু’দেশের সম্পর্কে গত কয়েক দশক ধরে টানাপোড়েন চলছে। ২০১৬ সালে করা এক মামলার প্রেক্ষিতে এই রায় দেন বিচারক। মামলা করেছিলেন ঘটনার শিকার হয়েছিলেন এমন বেশ কজন নারী যারা বিশ্বযুদ্ধের সময় কিশোরী ছিলেন অথবা ২০ এর কোঠায় ছিল তাদের বয়স।
জাপানি সৈন্যরা কোরীয় উপদ্বীপ দখল করে নেওয়ার পর তাদের অপহরণ করে নিয়ে গিয়ে যৌন সহিংসতা ও নির্যাতন চালানো হয় বলে অভিযোগ করেন তারা। রায়ে বলা হয়, প্রতিদিন অনেকবার জাপানের সেনাদের হাতে ধর্ষণের শিকার হতেন তারা।
যৌনদাসত্বের কবলে পড়া এই নারীদের জাপানি সেনারা বলতে কমফোর্ট উইমেন, অর্থাৎ নারী যাদের কাছে আরাম করার জন্য যেতো তারা।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ও তার আগের এসব অপরাধ আইন করে ক্ষমা করে দিয়েছে জাপান। দক্ষিণ কোরিয়ায় জাপানের দখলের অবসান হয় ১৯৪৫ সালে। কিন্তু তার মানসিক ক্ষত বয়ে নিয়ে বেড়াচ্ছে সেসময়ের ভুক্তভোগীরা। শুধু তাই নয়, তাদের বইতে হয়েছে সামাজিক কলঙ্কের বোঝাও।
এই মামলার বাদীদের দাবি অনুযায়ী বিচারক জাপানকে ৯১ হাজার ডলার ক্ষতিপূরণ প্রদানের আদেশ দিয়েছেন। তবে তিনি তার রায়ে বলেছেন, ভুক্তভোগীদের যে ক্ষতি হয়েছে তা অর্থের এই পরিমাণের চেয়ে অনেক বেশি।
এর আগে জাপানের বেশ কয়েকজন প্রধানমন্ত্রী এর জন্য ক্ষমা চেয়েছেন। তারা মনে করেন, বিষয়টি ১৯৬৫ সালের চুক্তির মধ্য দিয়ে সুরাহা হয়ে গেছে।
কিন্তু সেসময় দক্ষিণ কোরিয়া সামরিক শাসনের অধীনে ছিল। তাই সেই চুক্তি অনায্য ছিল বলে মনে করেন অনেক কোরীয় । এ বিষয়ে আরো একটি চুক্তি হয় ২০১৫ সালে। যেখানে জাপানের পক্ষ থেকে আবারও এ বিষয়ে ক্ষমা চাওয়া হয় এবং তারা ক্ষতিগ্রস্ত ওই নারীদের ৮০ লাখ ডলার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়।
চুক্তি থাকা সত্ত্বেও ভুক্তভোগী নারীরা এই মামলা করার অধিকার রাখেন বলে রায়ে বলেন বিচারক।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন