ইসমাম পারভেজ কনক
উম্মে ফাতেমা (১৪) কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার বর্ডার গার্ড পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজের নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থী। আপন মিরপুর উপজেলার আমলা সরকারী কলেজের শিক্ষার্থী।
দুইজনের মধ্যে দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। মেয়েটি ছেলেটিকে অগাধ বিশ্বাস করতো। একপর্যায়ে মেয়েটি ছেলেটিকে বিয়ে করার প্রস্তাব দেয় কিন্তু ছেলেটি বিয়ে করতে রাজি না হওয়ায়, মেয়েটি বলে যে "বিয়ে না করলে আমি আত্মহত্যা করবো এবং মরার পূর্বে তোমার নাম লিখে যাবো।"
ছেলেটি তখন ভয় পেয়ে যায় এবং ০৭ দিন পূর্বে থেকে মেয়েটিকে হত্যার পরিকল্পনা করতে থাকে। গত পরশু দিন রাত আটটার দিকে মেয়েটিকে ফোন করে এবং রাত ০১ টা ৫২ মিনিটে ফোন করে বলে যে, তুমি বাড়ি থেকে ০২ টা ৫০ মিনিটে বাইরে বের হয়ে আসবে।
এর মধ্যে ছেলেটি জায়গা দেখে আসে কোথায় নিয়ে মারবে। প্রথমে একটি ইটভাটায় যায় কিন্তু সেখানে লোকজন দেখায় পরবর্তীতে প্লানিং করে ভুট্টা ক্ষেতে নিয়ে মারবে। মেয়েটি বের হয়ে আসলে মেয়েটিকে নিয়ে ভুট্টা ক্ষেতে নিয়ে যায় এবং বলে যে একটি মাইক্রো গাড়ি আসবে তখন আমরা ঐ গাড়িতে চলে যাবো। তাদের আবেগের মুহূর্তের একপর্যায়ে মেয়েটি বলে যে, "তুমি আমাকে ছেড়ে চলে যাবে নাতো?" তখন ছেলেটি বলে "তোমার জন্য একটি সারপ্রাইজ আছে কিন্তু সারপ্রাইজ পেতে হলে চোখ বাঁধতে হবে।" তখন ছেলেটি মেয়েটির ওড়না দিয়ে চোখটা বেঁধে ফেলে এবং বলে "সারপ্রাইজ পেতে হলে একদমই নড়াচড়া করা যাবে না।"
তখন ছেলেটির পকেটে থাকা চাকু দিয়ে মেয়েটিকে উপর্যুপরি বুকে পেটে মারতে থাকে এবং সাথে থাকা সুতলি দিয়ে তার গলায় ফাঁস দেয়। সবশেষে ছেলেটি মেয়ের গলার উপরে উঠে মেয়েটির মৃত্যু নিশ্চিত করে। তারপর ছেলেটি চাকু ভেঙে দুইখণ্ড করে ফেলে দেয় ঝাড়ের মধ্যে এবং ওড়নাটি বাড়িতে এনে পুড়িয়ে ফেলে।
হত্যাকাণ্ডের ০৬ ঘণ্টার মধ্যে কুষ্টিয়া জেলার সুযোগ্য পুলিশ সুপার জনাব খাইরুল আলম SP Kushtia মহোদয়ের দিকনির্দেশনা এবং প্রত্যক্ষ উপস্থিতিতে মিরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ জনাব Golam Mostofa এর নেতৃত্বে মিরপুর থানা পুলিশ আসামীকে গ্রেফতার করে।
আসামী ইতোমধ্যে বিজ্ঞ আদালতে দোষ স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে!
*শিক্ষনীয় বিষয়:*
*** টিনেজার ছেলেমেয়েদের আবেগের বশবর্তী হয়ে প্রেমিকের হাত ধরে কখনোই রাত্রে বাড়ির বাইরে যাওয়া উচিত নয়।
*** পিতা-মাতার অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে ছেলেমেয়েরা কার সাথে মিশছে বা কোন মাদকাসক্ত ছেলেদের সাথে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ছে কিনা।
*** সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারের ক্ষেত্রে সর্তকতা অবলম্বন করতে হবে যেন পড়াশোনা বাদ দিয়ে এখানে অত্যধিক সময় অপচয় না করে।
*** অধিক রাত্রে কখনোই কারো ডাকে দরজা খোলা বা বাড়ির বাইরে যাওয়া উচিত নয়।
*** কম বয়সী বাচ্চাদের এন্ড্রয়েড ফোন ব্যবহারে অভিভাবকদের আরো সচেতন হওয়া উচিত।
*** আপনার বাচ্চার ফোনে কোন ভিপিএন (VPN) সফটওয়্যার ব্যবহার করছে কিনা সেটি খেয়াল রাখবেন।
*** যদি বাচ্চাদের এন্ড্রয়েড ফোন দিয়েই দেন তাহলে অবশ্যই i-sharing সফটওয়্যারের মত অ্যাপস ব্যবহার করে নিজের ফোনে লোকেশন শেয়ার করে রাখবেন তাহলে সর্বদাই আপনার সন্তানের অবস্থান সম্পর্কে অবগত থাকতে পারবেন।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন