ইসমাম পারভেজ কনক
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনরে একটি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের এডহক কমিটির প্রস্তাবনা নিয়ে প্রধান শিক্ষককে পেটানোর অভিযোগ উঠেছে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার (১৬ মার্চ) বিকেলে উপজেলা পরিষদে এ ঘটনা ঘটে। চিকিৎসার জন্য প্রধান শিক্ষক আল আমিন খানকে জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে।
উপজেলার লাউর ফতেহর আরএনটি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের এডহক কমিটির সভাপতি ব্যারিস্টার জাকির আহমেদ জানান, স্কুলের এডহক কমিটির মেয়াদোত্তীর্ণ হয়েছে। করোনাভাইরাসের কারণে এডহক কমিটি গঠন করা সম্ভব হয়নি। সম্প্রতি এডহক কমিটির সভাপতির জন্য প্রস্তাবনা প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সভাপতি পদে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান জাকির হোসেন সাদেক তার নাম এককভাবে প্রস্তাব করতে প্রধান শিক্ষক আল আমিন খানকে চাপ প্রয়োগ করেন। তখন প্রধান শিক্ষক আল আমিন খান তার শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ ও এনআইডি কার্ডের ফটোকপি দিতে বলেন। কিন্তু ভাইস চেয়ারম্যান তা দিতে পারেননি। এ নিয়ে বাক-বিতণ্ডা হয়।
তিনি জানান, মঙ্গলবার দুপুরে প্রধান শিক্ষক আল আমিন খান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে ফেরার পথে নিচতলায় ভাইস চেয়ারম্যান জাকির হোসেন সাদেক তার ওপর হামলা করেন। একজন শিক্ষক হচ্ছে মানুষ গড়ার কারিগর। তাদের ওপর হামলা হলে আর কী বাকি থাকে। আমি এই হামলার তীব্র নিন্দা জানাই। প্রধান শিক্ষক আল আমিন খান জানিয়েছে এই ঘটনায় তিনি আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় প্রধান শিক্ষক আল আমিন খান বলেন, আমি এই বিষয়ে কিছুই বলতে পারছি না। উনি যেভাবে চাচ্ছিলেন, আমি তেমনই করতে চাচ্ছিলাম। তিনি আমাকে এলোপাতাড়ি জনসম্মুখে মারধর শুরু করেন। আমি আর কিছু বলতে পারব না। আপনারা ইউএনওর সঙ্গে কথা বলুন।
মারধরের বিষয়টি অস্বীকার করে অভিযুক্ত বীনগর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান জাকির হোসেন সাদেক বলেন, এই স্কুলের এডহক কমিটি নিয়ে প্রধান শিক্ষক টালবাহানা শুরু করেন। তিনি বর্তমান সভাপতি জাকির হোসেনকে পুনরায় সভাপতি করতে চাচ্ছেন। আজ উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ে ছাত্রলীগের ছেলেরা প্রধান শিক্ষকের কাছে জানতে চেয়েছেন কেন তিনি টালবাহানা করছেন। এ নিয়ে বাক-বিতণ্ডা হয়। তখন আমি তাদের ফিরিয়ে নিয়ে আসি।
নবীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) একরামুল সিদ্দিকের কাছে এ বিষয়ে জানতে মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিলেও তার সরকারি নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া যায়।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মো. মেহেদী মাহমুদ আকন্দ বলেন, আমি বিষয়টি অবগত নই। জেনে বিস্তারিত আপনাদের জানাতে পারবো।
নবীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুর রশিদ বলেন, ফেসবুকে এমন একটি ঘটনার বিষয়ে দেখেছি। তবে কেউ লিখিতভাবে অভিযোগ করেননি। লিখিত অভিযোগ পেলে আইননুসারে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন