রিপোর্ট,
এস, এম রুলন উদ্দিন স্বাধীন
কুমারখালী,কুষ্টিয়া।
কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের জোতপাড়া গ্রামের এক র্যাব সদস্যর প্রতারণার শিকারে ৪টি পরিবার শেষ সম্বল হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছে। মধ্যপ্রাচ্যে পাঠানোর প্রলোভন দেখিয়ে তাদের নিকট থেকে প্রায় ২০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
র্যাব সদস্য আব্দুর রাজ্জাক কুমারখালীর জগন্নাথপুর ইউনিয়নের জোতপাড়া গ্রামের আকাই প্রামাণিকের ছেলে। এবং র্যাব ৩ এর অধিনায়কের গানম্যান।
ভুক্তভোগী আফছার শেখ জানান, ২০২০ সালের শুরুর দিকে একই গ্রামের র্যাব সদস্য আব্দুর রাজ্জাক তার ছেলে আশিককে ফিজি পাঠানোর কথা বলে ৫ লাখ টাকা দাবী করে। তিনি ফেব্রুয়ারী মাসের ৫ তারিখে ব্রাক এনজিও থেকে ৪ লাখ টাকা ঋন তুলে একই দিনে রাজ্জাকের বাবা আকাই প্রামাণিককে সাথে করে রুপালী ব্যাংকে রাজ্জাকের একাউন্টে দেড় লাখ টাকা জমা দেন। এবং পরবর্তীতে একই মাসের ৯ তারিখে একই একাউন্টে আরো ২ লাখ ৩০ হাজার টাকা এবং নগদ সহ ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা প্রদান করেন। পরবর্তীতে ভিসা জাল প্রমাণিত হওয়ায় বিদেশ যেতে না পারলে রাজ্জাক টাকা ফেরত না দিয়ে টালবাহানা করতে থাকেন। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় শালীসি বৈঠকের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত মতো প্রথম নেয়া ১ লাখ ৫০ হাজার টাকার মধ্যে রাজ্জাক রুপালী ব্যাংকের মাধ্যমে ১ লাখ টাকা ফেরত দেন এবং বলেন টাকা তুলতে র্যাবের অফিসারকে ৩০ হাজার টাকা দেয়া লাগছে। পরবর্তীতে কোনভাবেই ৩ লাখ ২০ হাজার টাকা ফেরত না দিলে বিভিন্নভাবে চাপ সৃষ্টি করার পর ২০২০ সালের অক্টোবর মাসের ৭ তারিখে ১২.৪০ (যা ব্যাংকের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংরক্ষিত আছে)মিনিটে রুপালী ব্যাংক থেকে ২ লাখ ৩০ হাজার টাকা তুলে আফছার শেখকে ৫০ হাজার টাকা দেন এবং বলেন পরে এ বিষয়ে কথা হবে। এই বলে ব্যাংক বের হয়ে যাওয়ার পর আর কোন টাকা ফেরত দেয়না চাইতে গেলে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকী দিচ্ছেন বলে জানান তারা।
অপরদিকে খোকসা শিমুলিয়া ইউনিয়নের পাইকপাড়া মির্জাপুরের আইয়ুব আলী জানান, একই সময়ে তার প্রবাসী জামাই সাইফুল ইসলাম দুবাই থেকে দেশে আসলে রাজ্জাকের দালাল পাংশা উপজেলার জয়কৃষ্ণপুরের রেজা ফিজি পাঠানোর জন্য সাইফুল সহ তার আত্মীয় শাজাহান ও রতনের নিকট থেকে ১৫ লাখ টাকা গ্রহণ করেন। প্রথমে রেজার নিকট সামান্য কিছু টাকা দিয়ে সন্দেহ হওয়ায় আর টাকা না দিলে রাজ্জাক তাকে ফোন দিয়ে বলেন আপনার ভাগ্নে মঞ্জু আমার বন্ধু টাকা দেন কোন সমস্যা নাই। তিনি জোতপাড়া এসে রাজ্জাক সমন্ধে খোঁজ নিলে র্যাবে চাকরী করে কোন সমস্যা নাই জানার পর। সমস্ত টাকা দিয়ে দেন। এবং ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারীর ১২ তারিখে ফ্লাইটের কথা বলে একটি অফিসে বসিয়ে রেখে রেজা পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে রাজ্জাকের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি এসে বলেন আপনারা চলে যান দেখছি। এখন পর্যন্ত কোন সুরাহা হয়নি। প্রথম দিকে ফোন দিলে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতেন এবং বর্তমানে ফোন রিসিভ করেনা বলে জানান। আইয়ুব আলী আরো জানান তার আত্মীয় দুইজন টাকার জন্য জোরপূর্বক চেক নিয়ে ২০ লাখ টাকার মামলা করেছে এবং তিনি প্রায় ১ বছর বাড়ি ছাড়া। এবং বাড়িতে গেলে পাওনাদাররা মারধর সহ জোড়পূর্বক বাড়িঘর লিখে নেবে বলে তিনি জানান।
এ বিষয়ে মুঠোফোনে র্যাব সদস্য আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আমি ব্যাংক থেকে টাকা তুলে ২ লাখ ৩০ হাজার টাকা আফছারকে দিয়েছি। ব্যাংকের সিসি ফুটেজে ৫০ হাজার টাকা ফেরত দিয়েছেন বললে বলেন আমি তার কাছে টাকা পেতাম আর আমাকে এতো প্রশ্ন করছেন কেন নিউজ করবেন করেন। প্রশ্ন করবেন কেন?
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন